অতিরিক্ত ওজন কমানোর উপায়। ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায়
আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এবং অনেকেই ওজন কমানোর জন্য বিভিন্নভাবে টাকা-পয়সা খরচ করছেন কিন্তু কাঙ্খিত ফলাফল মিলছে না।
একেক জনের একেক কারণে ওজন কমানোর চেষ্টা করে থাকে যেমন কেউ চাকরির জন্য, কেউ নিজেকে স্মার্ট ও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য আবার অনেক সময় দেখা যায় অস্ত্রোপচারের জন্য খুব দ্রুত ওজন কমানোর প্রয়োজন পড়ে । একজন সুস্থ ব্যক্তি চাইলে মাসে তিন থেকে পাঁচ কেজি পর্যন্ত ওজন কমাতে পারবে। আবার অনেক সময় দেখা যায় জরুরী ভিত্তিতে এক মাসের ভিতরে অতিরিক্ত ওজন কমানোর প্রয়োজন পড়ে সে ক্ষেত্রে ডাক্তার পরামর্শ নিয়ে ওজন কমাতে পারে।
এক মাসের ভিতরে আপনি যদি ৭ কেজি ওজন কমাতে চান তাহলে আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। শুধুমাত্র খাবার-দাবার নিয়ন্ত্রণ করলে যে ওজন কমানো যাবে তা নয়। সেক্ষেত্রে আপনাকে দৈনদিন সকল রুটিন একটি অভ্যাসে পরিণত করতে হবে।
১ মাসের ভিতরে ৪-৭ কেজি ওজন কমানোর কিছু উপায়
খাবার-দাবার নিয়ম পরিবর্তন
ওজন কমানোর জন্য খাদ্য গ্রহণ করার একটি নির্দিষ্ট টাইম মেনটেন করতে হবে। প্রতিদিনের সকালের নাস্তা দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবার যাতে প্রতিদিন একই টাইমে হয় এ বিষয়ে খেয়াল রাখুন। সকালবেলা নাস্তা দুপুরবেলা ভাত এবং রাত্রেবেলা হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং মাঝে মাঝে ফলমূল খাবেন এতে করে ওজন কমানো জন্য অনেক উপকারে আসে।
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা কমান
দুশ্চিন্তা ওজন বাড়ানোর জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা যেমন কাজকর্ম করলে খানাখাদ্য বেশি খায় ঠিক তেমনি অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে খানাখাদ্য বেশি খাওয়া যায় যার ফলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই নিজেকেও ওজন বাড়ানো থেকে বিরত থাকতে হলে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা যাবেনা।
ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম
ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম অন্যতম একটি মাধ্যম। ব্যায়াম করলে যেমন নিজেকে স্মার্ট করে গড়ে তোলা যায় ঠিক তেমনি ওজন কমাতে সাহায্য করে। ব্যায়াম বলতে আমরা অনেকেই বুঝি জিমে গিয়ে ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে ব্যায়াম করতে হবে এটা আমাদের ভুল ধারণা। ব্যায়াম বিভিন্ন মাধ্যমে করা যায়। ওজন কমানোর জন্য আপনি প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট টাইমে দেড় থেকে দুই ঘন্টা ব্যায়াম করাই যথেষ্ট। এই দেড় থেকে দুই ঘন্টা সময়ের মধ্যে আপনি হাঁটতে পারেন, দৌড়াতে পারেন। ওজন কমানোর অন্যতম ব্যায়াম হচ্ছে সাঁতার কাটা এবং সাইকেল চালানো। তাছাড়া পাশাপাশি আপনি দৈনদিন কাজের মাধ্যমে ব্যায়াম করে নিতে পারেন।
সুষম খাবার
অতিরিক্ত ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সুষম খাবার বেশ কাজে লাগে। সব সময় ফলমূল,শাকসবজি খাবার চেষ্টা করুন। চর্বি জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকুন। ভাজাপোড়া খাবার থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকুন। ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে ভাজাপোড়া ব্যাস ভূমিকা রাখে৷ বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুড থেকে বিরত থাকুন। সকালে এবং দুপুরের মাঝে এবং দুপুর এবং রাতের মাঝে খিদা লাগলে জুস বা ফল খেতে পারেন।
রাতের খাবার দ্রুত খাবার চেষ্টা করুন
রাতের খাবার দ্রুত বলতে দুই মিনিটের মধ্যে খাবার শেষ করতে হবে এরকম নয় । ওজন কমানোর জন্য রাতের খাবার ঘুমানোর এক থেকে দেড় ঘণ্টা আগে খেয়ে নিন। সব সময় চেষ্টা করবেন রাতের খাবার ৮ থেকে ৯ মধ্যে শেষ করার। আপনি চাইলে রাতের খাবার শেষে একটু হাঁটাহাঁটি করতে পারেন এত ওজন কমাতে সাহায্য করে। ঘুমানোর আগে যদি খিদা লেগে যায় দুধ অথবা ফলের জুস খেতে পারেন।
খাবারের আগে পানি পান
আমরা সাধারণত তিন বেলা খাবার গ্রহণ করে থাকি এ তিনবেলা খাবার গ্রহণের ১০ থেকে ১৫ মিনিট আগে পানি পান করুন। এতে করে হজম শক্তি বেড়ে যাবে। যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
অতিরিক্ত খাবার বন্ধ করুন
কোনকিছুই অতিরিক্ত ভালো নয় ঠিক তেমনি খাবারের বেলাও। যতটুকু প্রয়োজন ততটুক খান যদি অতিরিক্ত খান একটা সময় দেখতে পাবেন শরীরের অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাচ্ছে। তাই শরীরের ওজন সঠিক রাখতে অতিরিক্ত খাবার পরিহার করুন। নিয়মিত সুষম খাবার খান।
ওজন কমানোর জন্য গ্রিন টি উপকারিতা
নিয়মিত গ্রিন টি যা ওজন কমাতে বেশ কার্যকর। গ্রীন টিতে রয়েছে কিছু প্রকৃতির উপাদান যা শরীর চর্বি ক্ষয় করতে সাহায্য করে। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে আপনি যদি প্রতিদিন চার কাপ করে গ্রিন টি একসাপ্তা গ্রহন করেন ৪০০ গ্রাম ক্যালোরি ক্ষয় করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় গ্রিন টি রাখা উচিত ওজন কমানোর জন্য।
ওজন কমাতে পানির উপকারিতা
পানি পান করার মাধ্যমে ত্বক ও স্বাস্থ্যের জন্য উপকার হয় ঠিক তেমনি ওজন কমাতেও সাহায্য করে পানি। এক ঘন্টা পর পর পরিমানমত পানি পান করলে শরীরের ক্ষতিকর টক্সিন বের করে ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন খাদ্য তালিকার মধ্যে পানি রাখুন।
মিষ্টি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন
আপনি যদি ওজন কমানোর জন্য উপরের টিপসগুলো ফলো করে থাকেন তাহলে চিনি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। বৈজ্ঞানিক অনুযায়ী এক চামচ চিনির মধ্যে 16% ক্যালরি থাকে যা ওজন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই চিনি খাওয়া থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকুন।
দৈনন্দিন খাবারের সালাদ
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় সালাদ রাখুন। যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। শসা, গাজর আরো বিভিন্ন ধরনের ফলমূল দিয়ে সালাত তৈরি করেন। আপনি খুব দ্রুত ওজন কমাতে চাইলে বেশি বেশি করে শসা খান যা ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
আশা করি উপরের উল্লেখিত টিপসগুলো আপনি যদি দৈনিক দিনের কাজে লাগিয়ে চলতে পারেন তাহলে প্রতি মাসে ৪ থেকে ৭ কেজি পর্যন্ত ওজন কমাতে পারবেন।
এ ধরনের নিত্য নতুন তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজটি এখনি লাইক দিয়ে সাথে থাকুন নতুন নতুন আপডেট পেয়ে যাবেন
আরো জানুন