ই-সিম কি?? ই-সিম সুবিধা অসুবিধা E-SIM
ই-সিম কি?? ই-সিম সুবিধা অসুবিধা E-SIM
আমরা অনেকই ই-সিম নাম শুনেছি কিন্তু এখনো ব্যবহার করেন নি, কিভাবে ই সিম ব্যবহার করবেন,ই সিম কিভাবে কাজ করে, ই-সিমের সুবিধা অসুবিধা বিস্তারিত তুলে ধরবো এই পোস্টের মাধ্যমে যদি আপনার ই-সিম সম্পর্কে ধারণা কম থেকে থাকে এই পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন তাহলে বুঝতে পারবেন।
সিম কার্ড কি??
ই সিম কার্ড সম্পর্কে আপনাকে জানতে হলে প্রথমে একটু আমরা সংক্ষিপ্ত আকারে প্রচলিত সিম কার্ড সম্পর্কে জেনে নিন।
একটি সিম কার্ড সাধারণত যেকোনো ফোনে ইনস্টল করা লাগে তার মাধ্যমে বিভিন্ন অপারেটর সেবা নিয়ে থাকি। সিম কার্ড একটি প্লাস্টিকের কার্ড যার একটি কোণ নচ থাকে। তাছাড়া প্লাস্টিক আবরনের উপর একটি সোনালী সার্কিট থাকে যা সিম কার্ডের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান প্রদান করে এই সার্কিটের মাধ্যমে। প্রতিটি সিম কার্ডের একটি নির্দিষ্ট নাম্বার থাকে যেমন রবি জিপি, বাংলালিংক টেলিটক ইত্যাদি। এবং সিম কার্ড এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে ব্যবহার করা সম্ভব খুব সহজে।
ই-সিম কি
সিম কার্ড কি এবং কিভাবে সিম কার্ড কাজ করে তা উপর থেকে জানলাম। এখন আমাদের প্রশ্ন হল ই-সিম কি ই-সিম হচ্ছে এক ধরনের নতুন সিম প্রযুক্তি। যা প্রচলিত সিমকে নতুন করে সাজানো হয়েছে। তবে নরমাল সিমের মত ই-সিম রিমুভ করা যায় না অন্য ফোনে প্রবেশ করানো যায় না। এটি সরাসরি ফোনের মধ্যে যুক্ত থাকে।
ই-সিমের মধ্যে থাকা সকল তথ্য পরিবর্তনযোগ্য। অর্থাৎ সিম পরিবর্তন করা ছাড়াই বা নতুন সিম ব্যাবহার করা ছাড়াই সিমের বিভিন্ন অপারেটর পরিবর্তন করতে পারবেন ই-সিমের মাধ্যমে। ই-সিমের এমন সুবিধার ফলে আস্তে আস্তে প্রচলিত সিমের ব্যবস্থা একসময় বন্ধ হয়ে যাবে। বর্তমানে যেই স্মার্টফোন গুলোতে ডাবল সিম ব্যবহার করা হয় সেই ফোনগুলোতে সেকেন্ড সিম হিসেবে ই-সিমে ব্যবহারের শুরু হয়েছে।
ই-সিম সুবিধা কি
ই- সিমে সবচেয়ে বড় সুবিধা হল যে কোন মুহূর্তে যে কোন সময় সিমের অপারেটর পরিবর্তন করা যাবে। একটু ক্লিয়ার করে বলি মনে করে আপনি ই-সিম ব্যবহার করছেন। বর্তমানে আপনি গ্রামীন ই-সিম অপারেটর চালু রয়েছে এখন আপনি চাচ্ছেন রবি নেটওয়ার্কের আওতায় যাবেন এর জন্য আপনাকে কোন কিছু পরিবর্তন না করেই সুইস করে রবি নেটওয়ার্কে চলে যেতে পারবেন।
আরো পড়ুন....... গ্রামীণফোন ই- সিম। বাংলাদেশের ই-সিম। ই-সিম দাম কতো।
ই-সিম ব্যবহার করার ফলে আপনি এক নেটওয়ার্ক থেকে অন্য নেটওয়ার্কে খুব সহজে সুইচ করা যাবে। একটি ই-সিম এক সাথে ৫ টি ভার্চুয়াল সিমের তথ্য সংরক্ষণ করা যাবে। এর মানে হলো আপনি যে কোন সিমের নেটওয়ার্কের সমস্যা দিলে তাহলে আপনি যে কোন সিমের নেটওয়ার্কের আওতায় চলে আসতে পারবেন যে সিমে নেটওয়ার্ক থাকবে ই-সিমের মাধ্যমে।
একসাথে একাধিক সিম ব্যবহারের পাশাপাশি ডুয়েল সিম ব্যবহার ফোনসমূহ এর সাথে ই- সিম ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। যার ফলে একাধিক নাম্বার একটি ফোনে ব্যবহার করতে পারবেন। তাছাড়া ব্যবসার কাজে একটি নাম্বার, পার্সোনাল যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করার ক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী হবে ই- সিম।
সাধারণ সিমে চেয়ে e-sim আকারে খুব ছোট যার ফলে বাড়তি ফিজিক্যাল স্পেস পাওয়া যাবে। আর এই স্পেসকে কাজে লাগিয়ে স্মার্টফোনে নিত্যনতুন ফিচার অ্যাড করা যাবে। এছাড়া ফোনে যত ছিদ্র কম থাকবে ধুলাবালি থেকে সুরক্ষিত থাকবে।
স্মার্ট ফোন সাইজ কমানোর পাশাপাশি বিভিন্ন স্মার্ট ওয়াচ এর মত ছোট ডিভাইস গুলোতে ই- সিম সুবিধা পাওয়া যেতে পারে ভবিষ্যতে। বর্তমানে অ্যাপেল, স্যামসাং তাদের স্মার্ট ওয়াচ ডিভাইসগুলোতে ই-সিম সার্ভিস চালু করেছে
ই-সিম অসুবিধা
যেকোনো বিষয়ের সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধা রয়েছে ই সিমর এর বাহিরে নয়। ই সিম কিছু ডাউনসাইড রয়েছে এই প্রযুক্তি এখনো মেইনস্ট্রিম হয়নি।
প্রথমে শুনতে বেশ সহজ মনে হলেও ই সিম ডিভাইস সুইচ করা একটি জটিল প্রক্রিয়া। সাধারণ সিমের ক্ষেত্রে যেকোনো ফোন কাজ না করলে সিমটি খুলে অন্য সিমে ইন্সটল করলেই আমাদের সিমের সকল তথ্য চলে আসে অন্য ডিভাইসে। কিন্তু ই সিম ক্ষেত্রে একটু ব্যতিক্রম ই সিম ব্যবহার করা স্মার্টফোনে কোন সমস্যা হলে সেই স্মার্টফোন থেকে সিমের সকল তথ্য উদ্ধার করা খুবই একটি জটিল প্রক্রিয়া।
আরো পড়ুন....... গ্রামীণফোন ই- সিম। বাংলাদেশের ই-সিম। ই-সিম দাম কতো।
আপনি যদি কোন অপরাধ করেন সিমের মাধ্যমে খুব সহজে আপনাকে চিহ্নিত করা যায়। যদি আপনি নরমাল সিম ব্যবহার করে থাকেন সিমটি খুলে ফেললেই আপনকে পর্যবেক্ষণ করতে পারবেনা। কিন্তু ই সিমের ক্ষেত্রে এমন কোন অসুবিধা নেই। আপনার স্মার্টফোনটি যদি ছিনতাইকারী হাতে পড়ে তাহলে কোন তথ্য মুছতে পারবেনা
সকল নেটওয়ার্কই কি ই-সিম আওতাভুক্ত
না, বর্তমানে বাংলাদেশের সকল নেটওয়ার্ক ই সিম সাপোর্ট করে না। তবে এই প্রযুক্তি বাংলাদেশ খুব দ্রুতই সকল নেটওয়ার্ক আওতায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। এখন শুধু বাংলাদেশ সিম অপারেটর গ্রামীণফোন ২৫ এপ্রিল ২০২২ থেকে ই- সিম বিক্রি করা শুরু করেছে। তবে খুব দ্রুতই সকল নেটওয়ার্কের আওতায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে E-SIM।