টিন সার্টিফিকেট করার নিয়ম। টিন সার্টিফিকেট করতে কি লাগে। টিন সার্টিফিকেট কি।

টিন সার্টিফিকেট কেন দরকার। অনলাইন থেকে কিভাবে টিন সার্টিফিকেট করবে । টিন সার্টিফিকেট সুবিধা ও অসুবিধা বিস্তারিত নিয়ে আলোচনা করব। 

টিন সার্টিফিকেট করার নিয়ম। টিন সার্টিফিকেট করতে কি লাগে। টিন সার্টিফিকেট কি।


টিন সার্টিফিকেট কি 

আপনি দেশের একজন করদাতা এবং আপনার এক টি ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর আছে এরকম একটি সনদকেই টিন সার্টিফিকেট বলে। 

টিন সার্টিফিকেট ১০ সংখ্যার বিবরণ 

১০ সংখ্যার টিন নম্বরটি কর প্রদানকারী হিসেবে আপনার একটি পরিচিত নাম্বার যেটি দিয়ে আপনাকে সনাক্ত করা যাবে। এছাড়া বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই TIN Numbe দিয়ে টিন সার্টিফিকেট যাচাই করতে পারে। 

এই টিন নাম্বারের মাধ্যমে করদাতাকে চেনার উপায় হচ্ছে, প্রথম তিনটি সংখ্যা দ্বারা করদাতা কর অঞ্চল, মাঝখানের তিনটি সংখ্যা দ্বারা সেই করদাতার পদমর্যাদা এবং শেষ চারটি সংখ্যা দ্বারা করদাতা পরিচিত চিহ্নিত করা হয়। tin certificate  করা মানে তাকে কর দিতে হবে এমনটি নয়। 

টিন সার্টিফিকেট কেন দরকার? 

শুধু ব্যবসা বা চাকরি নয়,যেকোন ক্ষেত্রে আমাদের বাধ্যতামূলকভাবে  টিন সার্টিফিকেট তৈরি করা প্রয়োজন হয়। 

  • ব্যবসা শুরু করতে ট্রেড লাইসেন্স নিতে। 
  • গাড়ির মালিক হতে। 
  • সিটি কর্পোরেশন অঞ্চলঢাকা কোন জমি বা ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন করতে। 
  • ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড পেতে 
  • সঞ্চয় পত্র কিনতে 
  • কোন কোম্পানির শেয়ার কিনতে 
  • কোন পণ্যের আমদানি লাইসেন্স নিতে 
  • মুক্ত পেশাজীবী যেমন হিসাবরক্ষক 
  • নিজের কোম্পানি নিবন্ধন করতে 
  • আইনজীবী, চিকিৎসক,প্রকৌশলীদের পেশা চর্চা করতে 
  • নির্বাচনে প্রার্থী হতে 
  • ব্যবসায়িক সমিতি বা কোন নিবন্ধিত সংগঠনের সদস্য হতে। 
  • সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ওশাসিত সংস্থার দরপত্রে অংশ নিতে 
  • রাইড শেয়ারিং কোম্পানির গাড়ি নিতে 

উপরোক্ত ক্ষেত্রে আপনার আয়ে বয়সসীমার মধ্যে  মধ্যে  না আসলো আপনাকে বাধ্যতামূলকভাবে সার্টিফিকেট নিতে হবে। 

টিন সার্টিফিকেট সুবিধা 

  • tin certificate এর প্রথম সুবিধা হলো,আপনি দেশের একজন গর্বিত করদাতা হিসেবে নিবন্ধিত হবেন। আপনারাই কোড দিয়ে দেশ চলবে। 
  • এছাড়া টিন সার্টিফিকেট থাকলে আরও বিশেষ কিছু সুবিধা রয়েছে। যেমন ব্যাংকের আপনার জমাকৃত  অর্থের আয় থেকে ১০% কর কর্তন করা হবে। যদি টিন সার্টিফিকেট না থাকে ১৫% কর্তন করা হবে।
  • ব্যাংকের ঋণ বা ক্রেডিট কার্ড নিতে tin certificate থাকতে হবে যে কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে।  ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রনোদান দিয়ে থাকে সরকার, এসব সুবিধা নিতে হলে টিন সার্টিফিকেট থাকতে হবে। 

টিন সার্টিফিকেট এর অসুবিধা 

  • টিন সার্টিফিকেট এর একটি অসুবিধা হচ্ছে, আপনার করযোগ্য আয় থাক বা না থাক, আপনাকে প্রতিবছর অবশ্যই টেক্স রিটার্ন দাখিল করতে হবে। যদি রির্টান জমা না দেন আপনার ইনকাম কালো টাকা হিসেবে গণ্য হবে। 
  • যদি পর পর তিন বছর আপনার করযোগ্য আয় শূন্য হয় বা আপনার বার্ষিক আয় কর সীমানার মধ্যে না আসে, আপনি চতুর্থবার থেকে রিটার্ন না দিলেও চলবে। তাছাড়া আপনি আপনার আয়কর নিবন্ধন বাতিলের জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

কত টাকা থাকলে আয়কর দিতে হবে 

  • tin certificate থাকলে আপনাকে আয়কর দিতে হবে না।  তবে আপনাকে শুধু আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। 
  • একজন পুরুষ বার্ষিক আয় তিন লাখ, সব বয়সের নারী এবং 65 বছরের ঊর্ধ্বে সব নাগরিকের বার্ষিক আয় সাড়ে তিন লাখ এবং প্রতিবন্ধীদের বার্ষিক সাড়ে ৪ লাখ টাকার ওপরে আয় হলে আয়কর দেওয়া বাধ্যতামূলক। 
  • যদি আয় এর কম বা কর সীমানার নিচে হয়, তাহলে আয়কর দিতে হবে না। তবে যদি আপনার টিন সার্টিফিকেট থাকে আপনাকে জিরো রিটার্ন শূন্য বিবরণী জমা দিতে হবে। 



ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম

টিন সার্টিফিকেট করতে কি লাগবে 

টিন সার্টিফিকেট করতে তেমন কোন ডকুমেন্ট এর প্রয়োজন হয় না 

  • এনআইডি কার্ড বাধ্যতামূলক থাকতে হবে 
  •  যেকোনো একটি মোবাইল নাম্বার হলেই হবে 
  • একটি মেইল এড্রেস 
  • বেসিক ইনফরমেশন 


অনলাইনে ই টিন সার্টিফিকেট করার নিয়ম 

একটি সময় ছিল যে সময় ই টিন সার্টিফিকেট করার জন্য আপনার উকিল নিয়োগ  করতে হবে। কিন্তু বর্তমানে আপনি ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে e-tin certificate  জন্য আবেদন করতে পারবেন। কিভাবে আবেদন করুন পুরো বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। 

টিন সার্টিফিকেট করার জন্য প্রথমে আমাদের secure.incometax.gov.bd ওয়েব সাইটটি ওপেন করে নিতে হবে। ওয়েবসাইট ওপেন করার পর আপনাকে secure.incometax.gov.bd রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে রেজিস্ট্রেশন কিভাবে করবেন জেনে নিন। 

User ID : আপনার একটি ইউজার আইডি দিয়ে দিবেন অবশ্যই  ৮ সংখ্যার একটি ইউজার আইডি দিতে হবে। 

Password : চার সংখ্যার একটি পাসওয়ার্ড দিয়ে দিবেন। রিটার্ন পাসওয়ার্ডটি আবার দিবেন, আপনার সিকিউরিটি আনসার দিয়ে দিবে।  মোবাইল নাম্বার এবং ইমেইল এড্রেস দিয়ে নিচের ক্যাপচাটি পূরণ করে নিবেন এবং নিচে রেজিস্ট্রেশন ক্লিক করে নিবেন। রেজিস্ট্রেশন এ ক্লিক করার পর আপনার মোবাইল নাম্বারে একটা ওটিপি চলে যাবে সেই OTP বসিয়ে active এখানে ক্লিক করে দিবেন। ক্লিক করার পর দেখবেন আপনার ই টিন সার্টিফিকেট ওয়েব সাইটে রেজিস্ট্রেশন কমপ্লিট

এখন আপনাকে ওয়েবসাইটের উপর থেকে লগিন আপনি ক্লিক করতে হবে । রেজিস্ট্রেশন করার সময় যে ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড আমরা দিয়েছি সেই ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে নিব। 

লগইন করার পর সবার নিচে দেখবেন fro TIN registration/Re-registration click Hare ক্লিক করে দিবেন। দেখবেন আপনার সামনে একটি ফরম চলে এসেছে। আপনি আপনার সঠিক ইনফরমেশন দিয়ে ফরমটি ফিলাপ করে নিবেন। সকল ইনফরমেশন দেওয়ার পর go to next অপশনে ক্লিক করে দিবেন ক্লিক করার পর আপনার সামনে একটি বিশাল ফ্রম চলে এসেছে। ফরমটি আপনার এনআইডি কার্ড অনুযায়ী আপনি পূরণ করে দিবেন  এবং আপনার বর্তমান ঠিকানা স্থায়ী ঠিকানা সঠিকভাবে পূরণ করে দিন। যে খালি ঘরের সাথে স্টার চিহ্ন নাই সেগুলো পূরণ না করলেও চলবে। তথ্যগুলো ফিলাপ করার পর go to next  অপশনে ক্লিক করে দিবেন। তারপর দেখবেন আপনার সকল ইনফরমেশন শো করতেছে  যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে নিচের টিকমার্ক দিয়ে সাবমিট অ্যাপ্লিকেশন ক্লিক করে দিবেন। দেখবেন আপনার এনআইডি কার্ডের ছবি সহ সকল ইনফরমেশন শো করতেছে নিচের দিকে দেখবেন view  certificate /print  details যদি প্রিন্টার থাকে সাথে সাথে প্রিন্ট করে নিবেন প্রিন্টার না থাকলে  view  certificate এ ক্লিক করে আপনার পিডিএফ ফাইলটি ডাউনলোড করে মোবাইলে সেভ করে রাখবেন। যে কোন দোকান থেকে প্রিন্ট করে নিবেন এভাবে অনলাইনে টিন সার্টিফিকেট আবেদন করতে হয়

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url